সোমবার জুড়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্য মিশ্র মুভমেন্ট দেখিয়েছে। সকাল ও রাতে ইউরোর মূল্যের উত্থান সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন তুলেছে। হ্যাঁ, ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ছিল যা নিঃসন্দেহে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে রাতের বেলা বা সোমবার সকালে কোনো উল্লেখযোগ্য ঘোষণা আসেনি। তা সত্ত্বেও, সোমবার ঊর্ধ্বমুখী গ্যাপের সাথে ইউরোর ট্রেডিং শুরু হয় এবং নির্ধারিত প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই ইউরোর মূল্য বাড়তে থাকে।

এটি লক্ষণীয় যে গত সপ্তাহে, মূল্য মারে লেভেল "-1/8" - 1.0681 এর নীচে কনসলিডেট করতে ব্যর্থ হয়েছে। এইভাবে, এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বগামী রিট্রেসমেন্ট যৌক্তিক এবং প্রত্যাশিত বলে মনে হয়েছিল। যাইহোক, 4-ঘন্টা এবং 24-ঘন্টা উভয় টাইমফ্রেমেই এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, যা এই ইঙ্গিত দেয় যে এই পেয়ার নতুন করে দরপতনের আগে মোমেন্টাম অর্জন করছে। আসুন আমরা আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিই যে আমরা আগামী সপ্তাহ এবং মাসগুলোতে দরপতন ছাড়া ইউরো থেকে কোন কিছুরই আশা করছি না। অবশ্যই, দ্রুত এবং নিরবচ্ছিন্ন দরপতন হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তবে ইউরোর মূল্যের শুধুমাত্র নিম্নগামী হওয়া উচিত।

ইতোমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে এই সপ্তাহে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং মৌলিক পটভূমি বেশ শক্তিশালী হবে। সোমবার, আইএসএম সূচক সহ ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের ব্যবসায়িক কার্যকলাপের সূচক প্রকাশিত হয়েছিল। এছাড়া ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড সোমবার ভাষণ দেন। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। আজ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে, এবং মুদ্রাস্ফীতি বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলোর মধ্যে একটি। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই অঞ্চলের ভোক্তা মূল্য সূচক 2.5%-এ নেমে আসবে, যা ইউরোর জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নয়। ইসিবি আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণ শুরু করেছে, এবং এই সূচকের 0.1% পরিবর্তন সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয়বারের মতো নীতিমালা নমনীয়করণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি বা হ্রাস করার সম্ভাবনা কম। এটা স্পষ্ট যে দ্রুত মুদ্রাস্ফীতি কমবে, ফলে ইসিবি দ্রুত এবং আরও ঘন ঘন সুদের হার কমিয়ে দেবে। ফেডারেল রিজার্ভের কাছে সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার অন্য কোন বিকল্প না থাকায় ইউরোর মূল্য হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে। অতএব, কেবলমাত্র ইউরো কেমন গতিতে দরপতনের শিকার হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

এছাড়াও আজ, লাগার্ডে এ সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো বক্তৃতা দেবেন। আমরা তার কাছ থেকে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতির আশা করছি না, তবে তিনি মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারেন এবং ইঙ্গিত দিতে পারেন যে সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা সুদের হার কমাতে প্রস্তুত কিনা। এটা উল্লেখ করা উচিত যে ইসিবির কয়েকজন কর্মকর্তারা মনে করেন যে সুদের হার এত দ্রুত কমানো উচিত নয় (প্রতি দুইটি বৈঠকের একটিতে)।

সপ্তাহের শেষে, ইইউ-তে জুন মাসের পরিষেবা খাতে ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচকের চূড়ান্ত অনুমান এবং খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এগুলি খুব একটা উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন নয় এবং নিঃসন্দেহে মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের আড়ালে থাকবে। মনে রাখবেন, এটি মাসের শুরু, যার অর্থ শ্রম বাজার এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। অতএব, ট্রেডাররা মূলত মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদনের উপর দৃষ্টি রাখবে।

2 জুলাই পর্যন্ত বিগত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের গড় অস্থিরতা হল 50 পিপস, যা নিম্ন মান হিসাবে বিবেচিত হয়। আমরা আশা করছি যে মঙ্গলবার এই পেয়ারের মূল্য 1.0684 এবং 1.0784 এর মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল উপরের দিকে যাচ্ছে, কিন্তু বিশ্বব্যাপী এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অটুট রয়েছে। সিসিআই সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে, কিন্তু এটি নিয়ে ইতোমধ্যে একটি ঊর্ধ্বমুখী পুলব্যাক দ্বারা কাজ করা হয়েছে।

নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:

S1 - 1.0681

S2 - 1.0620

S3 - 1.0559

নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:

R1 - 1.0742

R2 - 1.0803

R3 - 1.0864

ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:

বিশ্বব্যাপী EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে এবং 4-ঘন্টার টাইমফ্রেমে মূল্য মুভিং এভারেজের উপরে অবস্থিত। পূর্ববর্তী পর্যালোচনাগুলিতে, আমরা বলেছিলাম যে আমরা এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রাখার জন্য অপেক্ষা করছি। বর্তমানে, এই পেয়ারের শর্ট পজিশন প্রাসঙ্গিক রয়েছে, তবে কারেকটিভ মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। 1.0681 থেকে টানা তৃতীয় রিবাউন্ড আরেক দফা বুলিশ কারেকশন উস্কে দিয়েছে। আমরা ইউরো কেনার পরামর্শ দিচ্ছি না, কারণ আমরা মনে করি যে বিশ্বব্যাপী এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা আবার শুরু হয়েছে এবং ইউরোর দর বৃদ্ধির কোনো ভিত্তি নেই। তবে কারেকশন অংশ হিসেবে কিছু সময়ের জন্য দাম বাড়তে পারে। বিশেষ করে এই সপ্তাহে, যখন কেউ জানে না ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামষ্টিক প্রতিবেদনের ফলাফল কেমন হবে।

চিত্রের ব্যাখা:

• লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
• মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
• মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
• অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
• সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।